হারা*মজাদি তোর রূপের খুব গরম না? এই রূপ দিয়েই তুই সব পুরুষের মাথা খাস? আজ তোর এই রূপই আগে নষ্ট করবো। আম্মা খুন্তি টাতে তাপ দিয়ে নিয়ে আসো তো? আজকেই ওর সব তেজ বের করবো?
আমি চিৎকার করে কেঁদে উঠে বললাম, কি হয়েছে আপা? আমি কি ভুল করেছি? ছাড়েন আমার লাগছে? আম্মা আমারে বাচাঁন?
ননদ আরো ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে উঠলো, কেউ বাচাঁবেনা তোরে? খুব শিখে গেছিস ছলা কলা? এই রূপ দেখাইয়া জাদু করছিস না আমার জামাইকে যে তোর হয়ে কথা বলে? আজকে তোর রূপ তো দূর করবই ভাইকেও ফোন করে তোর এইসব নষ্টামির কথা বলবো?
পেছন থেকে ননদের স্বামী বলে উঠলো, ছি নাজমা ছি? তোমাকে আমি ভালো মনে বললাম মেয়েটা স্বামী দূরে থাকে বাবা মা নেই একটু ভালো ব্যাবহার করো? আর তারজন্য তুমি মেয়েটার সাথে
এরকম ব্যাবহার করছো?
পেছন থেকে আমার শাশুড়ি বললেন, শুনো জামাই মেয়েলি বিষয়ে তুমি নাক গলায়ও না। বিষয়টা আমাদের দেখতে দেও। বৌমার উপর তোমার অত দরদ না দেখালেও চলবে?
ননদের স্বামী বললো, আচ্ছা আমি আর দরদ দেখাবো না। যার দরদ তাই দেখাবে। কিন্তুু আপনারাও এইবার সব সহ্যের সীমা পার করে দিছেন তার ফল পাবেন। আজকেই আয়ানকে ফোন করে সব জানিয়ে দিবো কি ব্যাবহার করছো তোমরা নূরের সাথে?
তার দরকার নেই দুলাভাই আমি সব নিজের চোখেই দেখেছি কথাটা বলে বাড়ির উঠানে দাড়ালো আয়ান। আয়ানকে দেখে তো সবাই অবাক? ও তো দুইবছর হলো বিদেশ। কাউকে না জানিয়ে এইভাবে বাড়িতে? আয়ানকে দেখে আমার ননদ আমার চুল ছেড়ে দেয়। আমার শাশুড়ি মা দৌড়ে আয়ানের কাছে গিয়ে বলে, একি বাবা তুই? কখন এলি? ভেতরে আয় নাজমা তাড়াতাড়ি আয় তোর ভাইকে ঘরে নিয়ে যা। এই বলে হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে যেতে থাকে।
আয়ান এক ঝাটকায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,
হাত ছাড়ুন আমার। আপনার স্পর্শে আমার গা ঘিনঘিন করছে। অনেক ভরসা করে আমি নূরকে আপনার কাছে রেখে গেছিলাম? কিন্তুু আপনি সেই ভরসার জায়গা কি করলেন? কি হাল করেছেন ওর? দিনের পর দিন আমি ওর সাথে কথা বলার জন্য চাইতাম আপনি নানান বাহানায় ফোন দিতেন না। অনেকদিন থেকে অনেকের কাছেই শুনতেছিলাম আপনার আর আপনার মেয়ের কাহিনি। কিন্তুু আমি বিশ্বাস করি নি। ভাগ্যিস সবাইকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য না জানিয়ে দেশে এসেছিলাম নইলে তোমাদের নোংরা চেহারা তো দেখতেই পেতাম না।
নূর এদিকে এসো। একমুহুর্ত আর এই বাড়িতে নয়। ছুটির কয়দিন দেশে কাটিয়ে তোমাকে নিয়ে একেবারে বিদেশ চলে যাবো। আর ফিরবো না। দেখবো তখন কার টাকায় এদের মা মেয়ের এত তেজ থাকে?
আমি আয়ানের দিকে এগিয়ে যেতেই পেছন থেকে ননদ এসে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেয় আর আয়ানের কাছে গিয়ে বলে, ভাই আমার কথা শোন? আমি সবটা তেকে বলছি.......... আর কিছু বলার আগেই আয়ান তার বোনকে জোড়ে একটা থাপ্পড় মারে আর বলে, তোর সাথে আমার কোনো কথা নেই। তারপর আমার কাছে এসে আমাকে মাটি থেকে তুলে বলে, আমাকে ক্ষমা করো নূর আমি আমার কথা রাখতে পারি নি? বাসর রাতে তোমাকে কথা দিয়েছিলাম তোমাকে কখনো কষ্ট পেতে দেবো না। কিন্তুু আমার পরিবার থেকেই এত কষ্ট পেয়েছো। তবে আর না।
আমি আয়ানকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলাম। আয়ান আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে ইশারায় কাঁদতে বারণ করলো।তারপর কাউকে কিছু না বলেও আমার হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হযে এলো এক অজানা পথের উদ্দেশ্য। আর বললো আমার উপর তোমার বিশ্বাস আছে তো নূর?
আমি মাথা নাড়ালাম।
ও সস্তির নিঃস্বাস নিয়ে বললো, ভালোবাসি নূর,অনেক ভালোবাসি তোমাকে।
আমি তার মুখে ভালোবাসার কথা শুনে মাথা নুইয়ে ফেললাম। সে আমার হাত শক্ত করে ধরলো তারপর দুজন একসাথে হাতে হাত রেখে সুখের গন্তব্যের দিকে পা বাড়ালাম......
~সমাপ্ত~
অনুগল্পঃ সুখের_গন্তব্য
মিশু
0 মন্তব্যসমূহ