" সোনালী,তুমি কেমন আছো "
পাড়ার বখাটে ছেলে রমেশ আজকাল সোনালীকে উত্তপ্ত করে।সোনালী কঠিন স্বরে রমেশকে জবাব দেয়
" আপনার জেনে কি হবে? "
" ওমনে কথা কও ক্যান,আমি কি তোমার পর?"
" আপনি আমার আপন ও না।রোজ এসে বিরক্ত করবেন না "
রমেশ মুখ ভোতা করে চলে যায়।আরো দু তিনটা ছেলে বিরক্ত করে।একদিন দোকানের সামনে পুলিশ দাঁড়ালো।সোনালি দোকানে একা।পুলিশ পোশাকে একজন এসে
" সিগারেট আছে? "
সোনালী বলে " জি না "
ছেলেটা এদিক সেদিক তাকিয়ে বললো " দোকান আপনি চালান? "
" বাবা মা"রা যাওয়ার পর মা চালায়। আমি মাঝেমধ্যে এসে হিসেবগুলো ঠিকঠাক আছে কিনা দেখি "
" ও আচ্ছা "
ছেলেটা চলে যাবে তখন সোনালি ইতস্তত করে " স্যার একটা কথা বলতাম "
" হ্যা বলুন "
" আমায় পাড়ার তিন চারটে বখাটে ছেলে রোজ বিরক্ত করে "
" কিভাবে বিরক্ত করে? "
" প্রেমপত্র দেয়।আজেবাজে কথা বলে "
" আচ্ছা,আমি দেখবো "
ছেলেটা চলে গেলো।এরপর থেকে ছেলেগুলো আর সোনালিকে বিরক্ত করেনা।বাড়ি যাওয়ার পথে দেখা হলে অন্যদিকে মুখ করে থাকে।তবে সমস্যা নতুন যুক্ত হয়েছে।পুলিশ ছেলেটা রোজ আসে।সোনালিকে জিগ্যেস করে
" সিগারেট আছে? "
" না "
" ছেলেগুলো ডিস্টার্ব করে? "
" না।আপনাকে বলার পর আর বিরক্ত করেনা "
" ও আচ্ছা। "
তারপর ছেলেটা মনমরা হয়ে চলে যায়।পরেরদিন আবার আসে।
" সিগারেট আছে? "
" না "
" ছেলেগুলো ডিস্টার্ব করে? "
" না "
অতঃপর চলে যায়।যখন মা বাসায় খেতে যায় বেছে বেছে তখনই তার আগমন।সোনালি একদিন লক্ষ্য করেছে,ছেলেটা মোড়ের চায়ের দোকানে বসে থাকে।চা খায়,সিগারেট খায়।যখন মা দোকানে থাকে না,ঠিক তখনি আসে। আজকে এসে বরাবরের মতোই
" সিগারেট আছে? "
সোনালি ভ্রু কুঁচকে " দোকানে বসলে সবসময় জিনিস চেয়ে কথোপকথন শুরু করতে হয় বুঝি? "
ছেলেটা থতমত খেয়ে গেলো।সোনালি এরুপ কথা বলতে পারে সেটা ছেলেটার কল্পনাতেও ছিলো না।ছেলেটা বললো
" ছেলেগুলো ডিস্টার্ব করে? "
" ওরা করেনা।পুলিশের একজন বিরক্ত করে।রোজ আসে।মোড়ের ওই চায়ের দোকানে চা সিগারেট খেয়ে আমার কাছে এসে সিগারেট চায়।উনি জানেন দোকানে সিগারেট বেচি না,জেনেও জিগ্যেস করে সিগারেট আছে কিনা "
ছেলেটা কপালের ঘাম মুছে " আমি বিরক্ত করতে চাইনি।দুঃখিত "
সোনালি ঠোঁ"ট টিপে হেসে " বিরক্ত হয়েছি।তবে ভয় নেই, অভিযোগ করিনি "
" আর বিরক্ত করবো না "
" বিরক্ত না করলে আরো বেশি বিরক্ত হবো "
" কি মুশকিল! "
" মুশকিল নিজের হাতে ডেকে এনেছেন।এখন বুঝুন মজা "
" এর থেকে বাঁচার উপায়? "
" আমি কি করে বলবো?নিজেই খুঁজে বেড় করুন "
" বিরক্তকন্যাকে যদি নিজের কাছে রাখার অনুমতি চাই,অনুমতি পাবো? "
" না "
ছেলেটার চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেলো।সোনালির খুব হাসি পাচ্ছে।হাসি চেপে রেখে
" যেদিন সিগারেটের বদলে আমায় চাবেন,সেদিন অনুমতি দিবো "
প্রণয়ের শুরু,একে অপরকে জানা অতঃপর ঘর বাঁধা।এক জোড়া চড়ুইপাখির সংসার জীবন।অসীম দুঃখের পর সুখের দেখা।
গল্প #এক_জোড়া_চড়ুইপাখি
লেখক #জয়ন্ত_কুমার_জয়
এই আইডি ব্যাতিত আমার কোনো আইডি নেই।যারা আমার গল্প পড়েন এই আইডিতে থাকতে পারেন।ধন্যবাদ 🤍
0 মন্তব্যসমূহ